বর্তমান যুগে সুপ্রতিষ্ঠিত মেয়েদের দেখেশুনে বিয়ে দেওয়ার চল খানিক কমলেও সম্বন্ধ করে যখন বিয়ে দেওয়া হয় কিংবা পাত্র-পাত্রীর বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক বাবা-মা খুব খুঁতখুঁতে স্বভাবের হন। এখন বেশিরভাগ বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদের নিজের মতো করে জীবনসঙ্গীকে বেছে নিতে বলেন। তবে, বর্তমান ট্রেন্ড এর পরোয়া না করেই জাদুকর পিসি সরকার তার তিন কন্যাকে পাত্রস্থ করার জন্য কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, jekgan লেখা হয়েছে, ‘‘জাদুশিল্পী পিসি সরকার জুনিয়র এবং জয়শ্রী সরকারের কন্যাদের জন্য জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ৩৮-৪৫ উপযুক্ত, সুদর্শন, দীর্ঘাঙ্গ, সুপ্রতিষ্ঠিত পাত্র চাই।’’
জাদুকর পিসি সরকার বর্তমান যুগের রীতির পক্ষপাতী না হওয়ায় আলোচনা হয়েছে জোরালো। তবে, এই নিয়ে জাদুকরের তাতে কিছু যায়-আসে না। মিস্টার সরকার প্রশ্ন তোলেন যে, আসলে চল কী ? আর প্রথাটাই বা কী? তা ঠিক কে করে? আর তা না মানলে কী বা আসে যায়? তিনি বলেন, ‘‘আমি তো বরং বলব পুজোর বাজার একটা দোকান থেকে না করে গোটা বাজারটাই দেখে নিচ্ছি।’’ জাদুকর পিসি সরকারের তিন কন্যা তারকা, তাদের মধ্যে দুই জন হলেন অভিনেত্রী, আর এক জন জাদুকর। বড় মেয়ে অর্থাৎ মানেকা সরকার পেশাদার জাদুশিল্পী। মেজো মেয়ে মৌবনী সরকার এবং ছোট মেয়ে মুমতাজ সরকার হলেন টলিউডের পরিচিত অভিনেত্রী।
তাদের পাত্রস্থ করতে হঠাৎ তাদের বাবা মায়ের বর্তমান ট্রেন্ড ছেড়ে এই পথে হাঁটার সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রশ্ন করে মৌবনী জানান যে, ‘‘এক জন বাবা তাঁর মেয়েদের বিয়ের জন্য কাগজে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। এ তো যে কোনও বাবা-মা দিতেই পারেন। আমার বাবা-মাও আমাদের তিন বোনের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। এটা তো খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। এটা নিয়ে এত হইচই করার কিছু নেই। বাবা-মা যদি আপনার ভবিষ্যতের দায়িত্ব নেন, তার থেকে ভাল আর কী হতে পারে!’’ তার কথায় এটা স্পষ্ট যে, তিনি কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়াকে কোনোভাবেই আধুনিকতা বিরোধী বলে মনে করছেন না, বরং তাদের বাবা যে তাদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা ভেবে তার বেশ ভালই লাগছে।
জাদুকরের বক্তব্য, তাদের মেয়েদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতেই তারা কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। তাতে তিনি অনেক পাত্রের মধ্যে থেকে মেয়েদের জন্য সেরা পাত্রকে বেছে নিতে পারবেন, যা চেনাজানার মধ্যে সেই সুযোগ থাকবে না। তিনি এও বলেন যে, তার কন্যাদের পছন্দের পাত্র থাকলে তিনি অবশ্যই তাদের মেনে নিতেন, কিন্তু তেমন যখন হয়নি, তখন তারাই দায়িত্ব নিয়েছেন। তার মতে এর সঙ্গে প্রথা মানা বা ভাঙার কোনো সম্পর্ক নেই। সময়ে সময়ে ট্রেন্ড বদলায়, কিন্তু নিজেদের সংস্কৃতিতে বাবা-মা কন্যার জন্য পাত্র খোঁজেন। তিনি সেই সংস্কৃতি নিয়ে ভীষণগর্বিত। অন্যরা হয়তো লজ্জিত, কিন্তু তাতে তার বয়েই গেছে।