পানীয় জলের জন্য হাহাকারে আচ্ছন্ন গোটা শিলিগুড়ি। এখনো মেটেনি জলের সমস্যা। আর পুরসভা যে জল সরবরাহ করছে, সেই জল পানের অযোগ্য। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের কালঘাম ছুটছে পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে। শিলিগুড়ির মানুষের এখন কেনা জলই একমাত্র ভরসা। এই সমস্যা কত দিন চলবে, তা বোঝা যাচ্ছে না, তবে, পুরসভার তরফ থেকে বলা হয়েছে, ২রা জুনের মধ্যে জলের সমস্যা মেটানো যাবে। শুক্রবার দুপুর ১টায় জলের সমস্যা নিয়ে মেয়র গৌতম দেব সাংবাদিক বৈঠক করবেন।
গত বুধবার রাতে গৌতম দেবো ঘোষণা করেন যে, পুরসভার সরবরাহ করা জল পানের অযোগ্য। তাই গোটা শিলিগুড়িবাসীকে ওই জল খেতে নিষেধ করা হয় এবং তিনি জানান যে, পুরসভার তরফ থেকে পানীয় জলের পাউচ বিলি করা হবে। এমনকি, বেশ কিছু জলের ট্যাঙ্কের মাধ্যমেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল সরবরাহ করার কথা বলেন তিনি। তবে, পাউচে চাহিদা মিটছে না জলের। আর তাছাড়া ট্যাঙ্কের জলও পর্যাপ্ত নয়। পুরসভা মোট ২৬টি ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা করেছে। এদিকে শিলিগুড়িতে ওয়ার্ড সংখ্যা ৪৭টি। প্রতিটি ওয়ার্ডে এক বেলা করে জলের ট্যাঙ্ক পাঠানো যাচ্ছে, যা পর্যাপ্ত নয়।
বেশির ভাগ মানুষ জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই সুযোগে শিলিগুড়িতে শুরু হয়েছে জলের কালোবাজারি। দোকানি ইচ্ছামতো দামে জল বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ। জল কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই যাদের, তারা পুরসভার ওই জলের ট্যাঙ্কের জন্যই অপেক্ষা করছেন। আর ট্যাঙ্ক এলেই জলের জন্য কাড়াকাড়ি শুরু হচ্ছে। লোকেদের এই ভিড় সামলাতে করা হয়েছে কুপনের ব্যবস্থা। সাধারণত তিস্তার জল পরিস্রুত করে শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়ে থাকে, কিন্তু গত বছরের হড়পা বানে তিস্তার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
বর্ষার আগে তা মেরামত করার জন্য কিছু দিন তিস্তার জল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এর বিকল্প হিসাবে পুরসভা, মহানন্দার জল পরিস্রুত করে সরবরাহ করছিল। তবে, মহানন্দার জল নিরাপদ নয়। তাই ওই জল খেতে নিষেধ করেন মেয়র। এরপরই শিলিগুড়িতে ছড়িয়ে পড়ে অসন্তোষ। গত বৃহস্পতিবার মেয়র জানিয়েছিলেন, সকলকে একজোট হয়ে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে কী বলেন এখন তা দেখার বিষয়।