রোগের কোনো দিনক্ষণ হয়না। যেকোনো সময়ই রোগের আগমন ঘটতে পারে আপনার শরীরে। উৎসবের আবহে শরীরের উপরে আমরা অজান্তেই অবহেলা করে ফেলি, যা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনা, তবে উৎসব শেষ হতে না হতেই বাড়তে থাকে রোগের ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার যদি হার্টের সমস্যা থাকে, তবে সেক্ষেত্রে শীতকালে বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। শীতে শরীরে অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। তাই এই সময়ে রক্তনালি সরু হয়ে যাওয়ায় কম পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছয় হৃদযন্ত্রে। এতেই হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও বাড়ে বেশ খানিক পরিমাণে।
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। গোটা শীতকাল জুড়েই কোনো না কোনো উৎসব লেগেই থাকে। এর ফলে এই উৎসবের আমেজে মেতে থাকা মানুষ তার শরীরকে অজান্তেই হেলায় ফেলে। এরপরই ঘটে বিপত্তি। আসলে উৎসব মানেই তো জমিয়ে ভূরিভোজ। একঘেয়ে খাবার থেকে বেরিয়ে একটু অন্য খাবারের স্বাদ নিতে মানুষ দশ পা এগিয়ে। উৎসবের আমেজে বাহারি খাবার খেতে ভাল লাগলেও আসলে তা শরীরের অন্দরমহলে যে কতখানি সমস্যা তৈরি করে তা বেমালুম ভুলে যান মানুষজন। প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্যালোরি, ফ্যাটের পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে, তাই কোলেস্টেরল, রক্তচাপ বাড়ে। আর সেখান থেকেই হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ঝুঁকি তৈরি হয়।
এই উৎসবের আবহে খাবারের পাশাপাশি পানীয় গ্রহণেও মত্ত হন অনেকেই। আসলে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি হোক কিংবা ঘরোয়া কোনো উৎসব, মদ্যপান না করলে যেনো উৎসব উদযাপনের ষোলোকলা পূর্ণ হয়না অনেকেরই। যদি হার্টের কোনো সমস্যা থাকে, তবে লাগামছাড়া মদ্যপান মোটেও ঠিক নয়, কিন্তু উৎসবের আমেজে অনেকেই সেই নিয়ম শিকায় তোলে। আর তখন বিপদ ঘনিয়ে আসে। মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন হার্টের রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। হার্ট ভাল রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করা খুবই জরুরি, তবে চারদিকে উৎসবের আমেজে শীতকালে আর শরীচর্চায় মন বসে না। একে উৎসবের আনন্দ, আর অন্যদিকে শরীরচর্চায় অভাব, সবমিলে হার্টের রোগীদের জন্য বিপদ যেনো লাফিয়ে লাফিয়ে দরজায় কড়া নাড়ে।