গত ৯ই আগস্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটা তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে একাধিক পুজো কমিটি দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর জি কর-কাণ্ডের পর হুগলি ও পূর্ব বর্ধমান জেলার কয়েকটি পুজো কমিটি অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কয়েক দিন আগে দুর্গাপুরের একটি পুজো কমিটিও এই সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতার নেতাজিনগর এবং বেহালার একাধিক পুজো কমিটি একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এবার সেই তালিকায় নাম জুড়লো নিহত ওই চিকিৎসক তরুণীর বাড়ির পাশের পাড়ার একটি পুজো কমিটির।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত জুলাই মাসে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে পুজোর সরকারি অনুদান ৭০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৮৫ হাজার টাকা করার ঘোষণা করেছিলেন। এরপর আর জি কর-কাণ্ডের জেরে একাধিক পুজো কমিটি অনুদান না নেওয়ার কথা ঘোষণা করার পাশাপাশি এও জানিয়েছিল যে, এই বছর পুজোয় জাঁকজমক কমাতেই মূলত এহেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এবার এই পথেই হাঁটলো নির্যাতিতার পাশের পাড়ার পুজো কমিটি। গত মঙ্গলবার সেই পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা, স্থানীয় থানায় গিয়ে এবছর অনুদান গ্রহণে তাদের আপত্তির কথা লিখে চিঠি দিয়ে অনুদান প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়। পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা জানান যে, পুজো হলেও আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পুজোকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের উৎসব ও জাঁকজমক এই বছর হবে না।
পুজো কমিটির সম্পাদক মানিক ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতি বছরই নবমীতে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। বিসর্জনও ধুমধাম করে হয়। থাকে শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান, কিন্তু এ বার সে সব কিছুই হবে না। অনুদান নিয়ে আমাদের কমিটির মধ্যেই মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। এরপরে এলাকার বাসিন্দারাও অনুদানে আপত্তির কথা জানান। তারপরেই আমরা অনুদান প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত নিই।’’ ওই এলাকার এক বাসিন্দা তমোজিৎ ভদ্র বললেন, ‘‘পাশের পাড়ার মেয়ে এই ভাবে খুন হয়েছেন। দেশ ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে এর প্রতিবাদ হচ্ছে। তার পরে আমরা কী ভাবে উৎসবে থাকতে পারি? অনুদান নিলে কোনও চাঁদা দেওয়া হবে না বলে আমরা অনেকেই জানিয়েছিলাম। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়, সরকারি অনুদান নেওয়া হবে না। বিচার চেয়ে আন্দোলন আর উৎসব একসঙ্গে চলতে পারে না।’’