ইচ্ছে থাকলে মানুষ ফুটপাত থেকেও নিজের যোগ্যতা তৈরি করতে পারেন। তবে, অনেকক্ষেত্রে তা ধামাচাপা পড়ে যায়। সেই ব্যক্তিকে নিয়ে তেমন বিশেষ আলোচনাও হয়না, কিন্তু আজ আমরা এমন এক শিল্পীর কথা বলতে চলেছি যিনি এক সময়ে জীবন শুরু করেছিলেন ফুটপাতের কোনো এক কোণ থেকে এবং আজ পেয়েছেন খ্যাতি। আমরা কথা বলছি শিল্পী শাকিলা খালি সম্পর্কে। তার কাজ বিভিন্ন স্তরে কথা বলে। তিনি কাগজের টুকরো দিয়ে ছোট ছোট ছবি বানাতেন। আর আজ তা বড় বড় ক্যানভাসে পৌঁছেছে।
শাকিলা তার গড়া ছবিতে জীবন তথা জীবনবোধের কথা বলেন। তার ক্যানভাসে নানা কাগজের টুকরো দিয়ে তৈরি হয় ছবি, এরপর তাতে রং পড়ে। এই ছবিগুলিতেই তৈরি হয় পৃথিবীর নানা প্রান্তের কথা। এবার বালিগঞ্জ এলাকার সিমা গ্যালারিতে শাকিলারই বিভিন্ন ক্যানভাস নিয়ে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী, যা চলবে আগামী ২৫শে মে পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে এই গ্যালারি খোলা থাকে। এবারের প্রদর্শনীতে আছে নানা ধরনের ক্যানভাস। ধর্ষণের মতো কঠিন সত্য থেকে শুরু করে ওলটপালট সময়ে জীবনযুদ্ধের কথা সবকিছুই ধরা পড়েছে শাকিলার ক্যানভাসে।
সিমা গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার, ৯০-এর দশক থেকে শাকিলার কাজ দেখছেন। তিনি বলেন যে, শাকিলার ছবিতে সাধারণের কথা বললেও, কী ভাবে তার কাজ দেশ-কালের সীমা ছাড়িয়ে যায়, সেই কথাই রাখীকে ভাবায়। সীমা বলেন, ‘‘শাকিলার সারল্যই আসলে ওর জোর। তা ওর কাজ দেখলেই বোঝা যায়।’’ গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার ছিল সিমা গ্যালারিতে প্রদর্শনীর সূচনা। ওইদিন সন্ধ্যায় সেখানে নানা গুণীজনের উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়। ওই প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকা অভিনেত্রী মুনমুন সেন, শাকিলার কাজের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলেন, তার মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে অনেক দিন ধরে শাকিলার কাজ সাজানো ছিল।
অভিনেত্রীর কথায়,‘‘শাকিলা এত সহজে এমন গভীর কাজ করে ফেলেন, সেটাতেই আমি মুগ্ধ।’’ ওইদিন প্রদর্শনীর সূচনায় যোগ দিয়ে নাট্যকার সুমন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সব খণ্ডচিত্রই তো এক হয়ে জীবনের কথা বলে। শাকিলার কাজ সে সব তুলে ধরেছে।’’ এদিকে যাকে নিয়ে এত কথা সেই শাকিলা খালি বলেন, ‘‘নিজের ছবি নিয়ে আমি না কিছু বলতে পারি না। ছবিতেই সব বলা আছে।’’