রবিবার গভীর রাতে সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যে দিয়ে স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায় এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে এবং এর সঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে বলেজানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে, পূর্ব রেল একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পূ্র্ব রেলওয়ের সমস্ত ডিভিশন যথাক্রমে হাওড়া, শিয়ালদহ, মালদহ, আসানসোল বিভাগ সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনে চলবে। এর আগে ঘূ্র্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে যেমন মেনে চলেছিল ঠিক তেমনভাবেই এবারেও মেনে চলা হবে।
পূর্ব রেল এবার ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর জন্য আগে থেকেই নিয়েছে প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই উপকূল সংলগ্ন স্টেশনগুলিতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। বেশ কিছু হোর্ডিং, ব্যানার সরানো হয়েছে সেখান থেকে এবং স্টেশনের ছাউনি মেরামতেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চালু থাকবে আপৎকালীন এবং ডিভিশনাল কন্ট্রোল রুম। আর এই কন্ট্রোল রুমে থাকবেন রেলের ইঞ্জিনিয়াংরিং, ইলেকট্রিক্যাল, সেফটি এবং অপারেটিং বিভাগের আধিকারিকেরা, যারা সময়ে সময়ে ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার, অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার এবং অন্য প্রবীণ আধিকারিকদের পরিস্থিতির খবর দিতে থাকবেন।
রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বাণিজ্য বিভাগের আধিকারিকেরা স্টেশনের ভিতরে এবং বাইরে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিংগুলি শক্ত করে লাগানো রয়েছে কিনা তা পরখ করে দেখছেন। এর পাশাপাশি পরখ করেদেখা হচ্ছে প্লাটফর্মের ছাউনি। রেলের লাইন, সেতু, ফুটব্রিজ ঝড়ে যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা দেখা হচ্ছে। রেলের আধিকারিক ও কর্মীরা বার বার টহল দিচ্ছেন। ডিআরএম পরিস্থিতি বুঝে ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবেন, তবে তার আগে কন্ট্রোল বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচন করবেন। ঝড়ের খবর পেলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি মাঝপথে ট্রেন থেমে যায়, তবে টাওয়ার কার দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রেল।
এবার শিয়ালদহ শাখাও বিশেষ ভাবে নিয়েছে প্রস্তুতি। শিয়ালদহের ডিআরএম দীপক নিগম শনিবার জরুরি বৈঠকে বসেন। আবহাওয়া দফতরের পূর্ভাবাস অনুযায়ী, এবার রেল মনে করছে যে, নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, হাসনাবাদ স্টেশনে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সব থেকে বেশি পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেলিকম কর্মীরা থাকছেন তৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য। লাইনে জল জমলে তা নিষ্কাশনের জন্য পাম্পের ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি শিয়ালদহ স্টেশনে আপৎকালীন আলোর ব্যবস্থাও রয়েছে। চালকদের পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের চালকদের শিয়ালদহ, দমদম, বারাসত, নৈহাটি, রানাঘাটের মতো স্টেশনে রবিবার সকালে থাকতে বলা হয়েছে এবং তাদের সতর্ক করা হয়েছে যে, লাইনে আশঙ্কাজনক কিছু দেখলেই কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়ে তৎক্ষণাৎ জানাতে।