চন্দননগরের পাহাড়ি কন্যার কথা কে না জানে। পেশায় তিনি একজন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা, সংসারের অভাব অনটন বাবার দেখাশোনা সংসারের চাপে ট্রেনিং খাওয়া- দেওয়ার কষ্টও মেয়ের অদম্য জেদকে চাপা দিতে পারেনি। আমরা কথা বলছি চন্দননগরের পিয়ালী বসাকের, গত শনিবারে কলকাতার প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
একটি ফিল্ম সোসাইটি আয়োজন করেছিল অ্যাডভেঞ্চার ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের, তার সাথে সাথে কিছু অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের কৃতিদেরও সংবর্ধনা জানাবারও ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে পিয়ালীর নাম নথিভুক্ত হয় আর হবে নাইবা কেন যার নির্মেদ চেহারা এমন কি অধিকতর উচ্চতাতেও তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা এতটুকু কমে না এমন মেয়েকে সংবর্ধনা না জানিয়ে উপায় কী?। হ্যাঁ, এটি পিয়ালীর বলা যেতে পারে ইউএসপি যে কারণে তিনি দুঃসাহসিকভাবে এভারেস্ট অভিযানেও মেতেছিলেন। তুষার ঝড়েও ভয়ে পিছপা হননি। বিনা অক্সিজেন সিলিন্ডারে পৌঁছে গিয়েছিলেন ধৌলাগিরি। এরপর একে একে নেপালের চার আট হাজারের শীর্ষ ছুয়েছেন।
বর্তমানে তিনি অন্নপূর্ণা মাকালু জোড়া অভিযানের কথা ভাবছেন। সেখানেও বিনা সিলিন্ডারে সাহায্য ছাড়াই। তবে এখনো পর্যন্ত এই কৃতির কোন ভালো স্পন্সর পাওয়া যায়নি শুধুমাত্র রয়েছে মনের জোর। ৩১ লক্ষ টাকা জোড়া অভিযানে যোগাড় হয়েছে মাত্র দু লক্ষ টাকা। তবে হাল ছেড়ে দেবার পাত্রী নন তিনি কারণ তিনি পাহাড়কে ভীষণ ভালোবাসেন। পাহাড়কে ছেড়ে থাকা তাঁর পক্ষে অসম্ভব। সবটুকুই এখন ক্লাউড ফান্ডিংই ভরসা, ইতিমধ্যেই তার মাথায় ৫০ লক্ষ টাকার ঋণের বোঝা। শয্যাশায়ী বাবার দায়িত্ব এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসারের চাপ কিন্তু কোন কিছুই তাঁকে দমাতে পারছে না। পাল্টা পিয়ালী দাবি করেছেন একসময় মেয়ে পর্বতারোহীদের দমিয়ে রাখা হলেও বর্তমানে তা আর হয় না তাই তিনিও ঘর ছেড়ে শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। এমন জোড়া অভিযানে পিয়ালী সাফল্য কামনা করি আমরা।