যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদ্বীপ কুন্ডুর মৃত্যু রহস্যে এলো নতুন মোড়। পুলিশের তদন্তে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে ছাত্রের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বুধবার মৃত্যুর আগে অস্বাভাবিক আচরণ করেছিলেন স্বপ্নদ্বীপ। তিনি নাকি বারবার সবাইকে বলছিলেন, আমি সমকামী নই।
আরো জানা গেছে, বুঝলে তিন তলা থেকে পড়ে যাবার সময় স্বপ্ন দ্বীপের হাত ধরে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন হোস্টেলের এক কাশ্মীর পড়ুয়া কিন্তু ব্যর্থ হয়ে যান তিনি। হাত ফসকে নিচে পড়ে যান ওই মৃত ছাত্র। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
ময়না তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গেছে, নির্দিষ্ট উচ্চতাকে পড়ে যাওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ছাত্রের। বাঁদিকের পাঁজরের হাড় ভেঙে যায় এবং বাঁদিকের মাথায় চির ধরে যায়। স্বাভাবিকভাবেই অভ্যন্তরীণ আঘাত গুরুতর হওয়ায় মৃত্যু হয় স্বপ্নদ্বীপের। শরীরে মদ্যপানের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রতিদিনের মতো খাবার খেয়েছিল ওই ছাত্র।
অন্যান্য ছাত্রদের কথা অনুযায়ী জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যে থেকেই স্বপ্নদ্বীপ অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। কোন নির্দিষ্ট কারণে ভীষণ ভয় পাচ্ছিল সে। বারবার বলেছিল আমি সমকামী নই। রাতে বারবার শৌচাগারে যাচ্ছিল স্বপ্ন দীপ। সেই সময় পরনে শুধুমাত্র গামছা ছিল।
স্বপ্নদ্বীপের অস্বাভাবিক আচরণের কথা জানতে পেরে ডিন অফ স্টুডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন অন্যান্য ছাত্ররা। রাত এগারোটার পর আর ডিনের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করা যায়নি। স্বপ্নদ্বীপের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ওই কাশ্মীরি যুবক উপর থেকে নিচে নেমে এসেছিলেন। স্বপ্নদ্বীপকে পড়ে যেতে দেখে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি কিন্তু হাত ফসকে পড়ে যায় স্বপ্নদ্বীপ।
পুলিশ সূত্রে এও জানানো হয়, বুধবার হোস্টেলের ওই ভবনের নিচের ঘরে একটি বৈঠক চলছিল ছাত্রদের। স্বাভাবিকভাবেই হোস্টেলে অনেক ছাত্র ছিল সেই সময়। ঘটনাস্থলে মৃত্যুর সময় অনেকে থাকার পরেও স্বপ্ন দেখে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।