সায়ন নন্দী, কলকাতা : বাংলায় ২৯শে মার্চ ,২৩ এ যেন অকাল “বড়দিন” এর চারিদিকে রব। ভাবছেন কেন? বঙ্গ রাজনীতির বুকে সমস্ত বড় দল গুলি নিজ ক্ষেত্রে নিজ দাবি নিয়ে লড়লেন সারাদিন। রেড রোডে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরোধীতা , রান্নার গ্যাস থেকে দ্রব্যমূল্যের চড়া দাম কে সাধারনের আয়ত্তে আনার দাবিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ৩০ ঘন্টা ধর্না মঞ্চের শুভারম্ভ হলো। সেখান থেকে মাত্র ৬০০ মিটার দুরেই সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এর ছাত্র যুব দের নিয়ে শহীদ মিনারের তলায় সংঘটিত হলো এক বিশাল সমাবেশ। যে সমাবেশের বার্তা ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট, রাহুল গান্ধীর পদস্খলন থেকে তাকে নিয়ে চলতে থাকা বিভিন্ন দুর্নীতির জল্পনা র বিরুদ্ধে সওয়াল তোলা।
তবে শাসকের এহেন কর্মসূচির মাঝেও ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে চলতে থাকা অনশন কারীদের এক অভিনব ধর্না মঞ্চ দেখা গেল আজকে। তারা সকলেই অনশন করলেন বটে , তবে চকোলেট এবং ফ্রুট জুস খেয়ে। তাদের গলাতেও শ্লেষের সুর সিঙ্গুর আন্দোলোনের অনশন মঞ্চে থাকাকালীন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও নাকি সাহায্য নিয়েছিলেন এই চকোলেট এবং ফ্রুট জুসের। যারপরেই তিনি বঙ্গ রাজনীতি তে তিনি নাকি সফলতার মুখ দেখেন। তাই ডিএ অনশনকারীরাও আজকে সেই পথেই হাটলেন।
শাসকের মধ্য কলকাতা শাসনের সময়েই , রাজ্যের প্রধান বিরোধী বিজেপির সমস্ত হেভিওয়েট নেতারা বসেছিলেন শ্যামবাজার মেট্রোর সামনে ধর্নাতে। তাদের দাবী ছিল যদিও সম্পূর্নই তৃনমূল এর দুর্নীতির বিরোধীতা করা। শুভেন্দু অধিকারী থেকে রাহুল সিনহা , দিলীপ ঘোষ সুকান্ত বাবুরা দুর্নীতির প্রতিবাদে আওয়াজ এবং পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কলকাতা তে একটি আবাসিক শিবিরের ন্যায় গা ঘামিয়ে নিলেন।
অপরপ্রান্তে , কেরালা তে মারামারি করলেও বঙ্গে সখ্যতার ওপরেই আরো জোর বাড়ানোর চেষ্টা করলো বাম এবং কংগ্রেস। তাদের দুটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে দুটি আলাদা মিছিল হওয়ার কথা থাকলেও , লোকসংখ্যার অভাব কিংবা জোটের মতোই রহস্যময় কারনে কংগ্রেস বামেদের মিছিল শুরু হওয়ার জায়গা রামলীলা ময়দান থেকেই বামেদের কাধে কাধ , হাতে হাত রেখে মিছিল শুরু করলো নিজেদের কর্মসূচি কে জলাঞ্জলি দিয়ে। পঞ্চায়েতে জোট যে এখন অবশ্যম্ভাবী তা এখন অন্ধেও বুঝতে পারলেও। দুই দলের ই নীচু তলার কর্মীদের জোট এ ভোটের প্রতি সম্মতি কতটা বা উচ্চ নেতৃত্বের আদেও তা জানার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না।
তবে , একটা কথা অনস্বীকার্য যে বঙ্গ রাজনীতি তে প্রতিটি হেভিওয়েট দলের এহেন পঞ্চায়েত ভোটের আগে শক্তিপরীক্ষা একই দিনে বাংলার মানুষ শেষ কবে দেখেছে , তা মানুষ কে ভাবাবে। বাংলার অকাল ” বড়দিন ” বলে ২৯ শে মার্চ , ২৩ কে আখ্যা দিলে খুব অপ্রাসঙ্গিক যে হবেনা তা প্রশ্নাতিত। এখন পঞ্চায়েতে মানুষের রায় কার পক্ষে যায় সেটাই দেখতে আগ্রহী পশ্চিমবঙ্গবাসী।