গত মঙ্গলবার কেরালার ওয়েনাড়ে ভূমিধস বিপর্যয়ের কারণে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়।বিচ্ছিন্ন হয় যোগাযোগের রাস্তা। গত বৃহস্পতিবার ওয়েনাড়ের ভূমিধসে বিপর্যস্ত চুরালমালা থেকে মুন্ডাকাই পর্যন্ত ১৯০ ফুট লম্বা একটি বেইলি ব্রিজ খুব অল্প সময়ের মধ্যে তৈরি করে নতুন ইতিহাস গড়ল ভারতীয় সেনা। ত্রাণ এবং উদ্ধারের কাজ আরও দ্রুত করার জন্য ২৪ টন পর্যন্ত ওজন বইতে সক্ষম এই সেতুটি তৈরি করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ১৯০ ফুট দীর্ঘ বেলি ব্রিজ তৈরি করে ভারতীয় সেনার মাদ্রাজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে যে, এই নতুন সেতুর মাধ্যমে বিকল্প পথে ভূমিধস কবলিত চুড়ালমালা এবং মুন্ডাক্কাইয়ের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
এমনকি ইরুভঞ্জিপ্পুঝা নদীর উপর নির্মিত এই বেলি ব্রিজটি উদ্ধারের কাজ চালাতে সাহায্য করবে। জানা গেছে, ভারতীয় সেনা, ৩১শে জুলাই রাত ৯টা থেকে ১৯০ ফুটের ওই বেইলি ব্রিজটি তৈরির কাজ শুরু করেছিল। ব্রিজটি সম্পূর্ণ তৈরি হয় ১লা অগাস্ট বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। মোট ১৬ ঘণ্টায় ব্রিজটি তৈরি করে ফেলেন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। কেরলের ওয়েনাড়ে বর্তমানে উদ্ধারকাজ যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার সেখানে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৯০ এবং আশঙ্কা করা করা হচ্ছে যে , এই সংখ্যা ক্রমে ৩০০ পেরোবে। উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে জলস্ফীতি এবং হড়পা বানের বিপর্যয়ের সময় কার্যকর হয়েছিল সেনার ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কোর’-এর তৈরি ওই ইস্পাতের অস্থায়ী সেতুটি।
বিপর্যয়ের পর তিস্তা নদীর উপর ১৫০ ফুট দীর্ঘ বেলি ব্রিজ বানিয়েছিল ভারতীয় সেনা এবং বর্ডার রোডস অর্গানাইজ়েশন। এর আগেও ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ায় মৃত্যু হয় পাঁচ জনের, যার ফলে দক্ষিণ শহরতলির একটা বড় অংশের সঙ্গে মূল শহরের যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়। তখন সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প রাস্তা তৈরি করা যায়নি, কারণ ওই সেতুর নীচে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইন ছিল, ফলে অফিসযাত্রীরা প্রতিদিন কর্মস্থলে পৌঁছতে সমস্যার সম্মুখীন হতেন। তাই সেই সময়েই শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইন এবং চেতলা খালের উপরে ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে তৈরি হয়েছিল প্রায় ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের অস্থায়ী বেলি ব্রিজ। সেই অস্থায়ী সেতুটি একদিকে আলিপুর অ্যাভিনিউ এবং অন্যদিকে হুমায়ুন কবীর সরণিকে যুক্ত করেছিল।