চারিদিকে বয়কট মলদ্বীপের দামামা বাজছে। আর এর মাঝে মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে তিন মন্ত্রীকে সাসপেন্ড করেছেন, কিন্তু তাতে মোটেও চিড়ে ভেজেনি। বরং মলদ্বীপের বিরোধী নেতাদের সম্মিলিত নিশানার মুখে পড়েছেন রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু। শোনা গেছে যে, এবার তাঁকে বরখাস্ত করার জন্য পার্লামেন্টে বিরোধী নেতৃত্ব আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনতে পারে।
গত সপ্তাহে মুইজ্জু সরকারের তিন মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ইব্রাহিম সোলি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এমনকি মোদীকে অবমাননার জন্য এক প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদও প্রতিবাদ করেছিলেন। মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান ফয়াজ় ইসমাইল প্রকাশ্যে ‘পিপল্স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর নেতা মুইজ্জুকে দোষারোপ করে ভারতের সঙ্গে ‘সম্পর্কের ক্ষত’ মেরামতের ডাক দেন। গত সোমবার মুইজ্জু পাঁচ দিনের চিন সফরে গেছেন।
এরই মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ, মুইজ্জুর বিরুদ্ধে মালে-নয়াদিল্লি সম্পর্ক নষ্ট করার অভিযোগ তুলেছেন। গত সোমবার মলদ্বীপের পার্লামেন্টের বিরোধী নেতা আলি আজিম নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “আমরা চাই দেশের বিদেশনীতিতে স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক এবং কোনও প্রতিবেশী দেশকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বন্ধ হোক।” এরপরই প্রশ্ন তোলেন, মুইজ্জুর প্রেসিডেন্ট পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না। এমনকি তিনি প্রেসিডেন্টকে পদচ্যুত করারও দাবি তোলেন। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।
এই আবহেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপ সফরে গেছিলেন। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেন, যা ঝড়ের বেগে ভাইরাল হয়। মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী যথাক্রমে মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাহজ়ুম মাজিদ ওই ছবিতে মোদীকে ‘পুতুল’ এবং ‘জোকার’ বলে মন্তব্য করেন। এমনকি তারা ভারত-ইজ়রায়েল সম্পর্ক নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। যদিও বিতর্ক অগ্নিরুপ নিলে পোস্টগুলি মুছে দেওয়া হয়। আর তারপরই রবিবার সাসপেন্ড করা হয় ওই তিন মন্ত্রীকে। অপরদিকে ভারতের শুরু হয় মলদ্বীপ বয়কট। এবার একপ্রকার দুমড়ে পড়ার মুখে মলদ্বীপ অর্থনীতি।