হাজারো নিরাপত্তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঘরে ঢুকে এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে অভিনেতা সইফ আলি খান। জানা গেছে যে, বুধবার রাতে এক ব্যক্তি, বান্দ্রা ওয়েস্টে সইফের সাততলার ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ায় বাড়ির পরিচারিকার সঙ্গে বাকবিতন্ডা বেধে যায়। তাদের কথা শুনে সইফ আসেন। এরপর বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। এরই মাঝে সইফ আলি খানকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে ৬ কোপ মারে ওই ব্যক্তি। ভোর ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। এরপর তড়িঘড়ি অভিনেতাকে মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় যে, অভিনেতা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর লরেন্সের দলের বিরুদ্ধে বলিউড ভাইজান সলমন খানের বাড়িতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। এর ঠিক কয়েক মাস পরেই প্রকাশ্যে খুন হন সলমন-ঘনিষ্ঠ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিক বাবা সিদ্দিকি। আর এবার সইফের ওপর এহেন হামলা একটি ঘটনা দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আসলে ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শ্যুটিং করতে সলমন রাজস্থান গেছিলেন। সেই সময় সলমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি জোধপুরের কঙ্কনি গ্রামে দুইটি বিরল প্রজাতির কৃষ্ণসার হরিণ এবং তিনটি চিঙ্কারা শিকার করেছিলেন। মোট চারটি মামলা দায়ের হয়েছিল অভিনেতার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ সময় মামলা চলার পর অভিনেতা নির্দোষ প্রমাণিত হন। ওই শিকারের কারণেই বিশ্নোই সম্প্রদায়ের লরেন্স বিশ্নোই ও তার দলবল সলমন খানের শত্রু হয়ে ওঠে।
১৯৯৮ সালে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার পর থেকেই বিশ্নোই গোষ্ঠী, বলিউড অভিনেতাকে হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের দাবি, সলমনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, কিন্তু সলমন তাদের দাবি মানেননি। তাই সময় যত এগোচ্ছে, বিশ্নোই গোষ্ঠীর ক্ষোভ ততই বেড়েছে। অভিনেতা গত বছর নয়া হুমকি পেয়েছেন বলেও জানা গেছে। এর জেরে সলমনের ঘনিষ্ঠদেরও নিস্তার নেই বলে হুমকি দিয়েছেন লরেন্স বিশ্নোই। ২৬ বছর আগে সেই শিকারে সলমনকে সঙ্গ দিয়েছিলেন সইফ আলি খান। এখন প্রশ্ন উঠেছে যে, তবে কি সেই ঘটনারই মাসুল দিতে হলো সইফকেও? মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সদস্যেরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। জোরকদমে চলছে তদন্ত। এই মুহূর্তে মুম্বই পুলিশ, অভিনেতা সইফের বাড়িতে হামলার ঘটনায় কোনো দলের যোগ স্বীকার করেনি। সইফ আলি খানের অ্যাপার্টমেন্টের সিক্যুরিটি গার্ড সহ তার ৩ স্টাফকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। ঘটনাটি যেই সময় ঘটে, তার ২ ঘণ্টা আগে অবধি কোনো ব্যক্তির বিল্ডিংয়ের ভেতরে ঢোকার ছবির সিসিটিভিতে ধরা পড়েনি। ওই ব্যক্তি অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরেই ছিল বলে পুলিশের অনুমান।