আর জি কর কান্ডকে ঘিরে একের পর এক প্রকাশ্যে আসছে। চলছে বিচারের দাবি চেয়ে বিক্ষোভ, আন্দোলন। এবার আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের নানা জেলার মেয়েরা রাত দখলের আহ্বানের ধাঁচেই ‘মুসলিম মেয়েরা দখল নাও’ ডাক দিয়ে মুসলিম পারিবারিক আইনের বৈষম্যমূলক নানা দিক সংস্কারের দাবিতে সরব হন। এমন অনেক নিপীড়িত, নিষ্পেষিত স্বর সম্প্রতি ভাষা খুঁজে পেল মহাবোধি সোসাইটি হলের একটি অনুষ্ঠানে।
এই অনুষ্ঠানটির আয়োজক রোকেয়া নারী উন্নয়ন সমিতি, সোসাইটি ফর এমপাওয়ারমেন্ট এর তরফ থেকে অধ্যাপিকা আফরোজা খাতুন, সমাজকর্মী খাদিজা বানুরা বলেন যে, “মুসলিম পারিবারিক আইনের নানা বৈষম্য পাকিস্তান কবেই সংস্কার করেছে, কিন্তু ভারতের হেলদোল নেই। অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েরা পুরুষদের তুলনায় সম্পত্তির ভাগ কম পান। তা ছাড়া, একসঙ্গে তিন তালাক বন্ধ করার আইন হলেও একতরফা ভাবে ধাপে ধাপে মৌখিক তালাক পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।”
তারা জানিয়েছেন নিকাহ হালালার মতো পীড়নমূলক সামাজিক রীতি বিক্ষিপ্তভাবে বহাল রয়েছে। আফরোজা, খাদিজা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, “হিন্দু মৌলবাদ যেমন দেশের মুসলিম সমাজকে আক্রমণ করছে, তেমনই হিন্দু মৌলবাদ সুবিধা পাবে ভেবে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন অনেকেও মুসলিম মেয়েদের কষ্টে নীরব।” এখানে মগরাহাট বা ভগবানগোলা, উলুবেড়িয়া বা পান্ডুয়া থেকে আসা সকল মেয়েরা নিজেদের জীবনের লড়াইয়ের গল্প বলেন। এমনকি আর জি করের ওই তরুণী চিকিৎসকের জন্যও তারা কাঁদেন।
এই অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার মাফরুজা খাতুন, হীরা খাতুন সভায় নিজের কথা বলেন। মগরাহাটের গ্রাম থেকে কলকাতায় আসা কারিমা খাতুন তার সাথে ঘটা ঘটনার বিষয়ে বলেন। তিনি জানান, দেড় দশক আগে তার বয়স যখন ১৩ বছর, তখন তাকে পাচার চক্রের দালালেরা ভিন রাজ্যে বিক্রি করে এক প্রৌঢ়ের সঙ্গে বিয়ে দেয়। ছবছর আগে তিনি তার দুই সন্তানকে নিয়ে কোনোমতে পালিয়ে আসেন এবং বর্তমানে তিনি জরির কাজ করে জীবন কাটাচ্ছেন, এমনকি তার সন্তানদের স্কুলেও পড়াচ্ছেন।