বর্তমানে রাজ্যজুড়ে চলছে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে তোলপাড়। চারিদিকে বিক্ষোভ মিছিল এর মাঝেই অভিনেতা তথা উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের একটি বক্তব্যকে ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। আসলে, গত রবিবার একটি ধর্নামঞ্চ থেকে কাঞ্চন বলেছিলেন, “জুনিয়র চিকিৎসকেরা প্রতিবাদে শামিল। মাসের শেষে সরকারি বেতন, পুজোর আগে বোনাস হাত পেতে নেবেন তো?”
এরপরই বিধায়ক অভিনেতাকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করে পরমব্রত সমাজমাধ্যমে লেখেন, “না বন্ধু ! মাইনে-বোনাস আর অনুদান-পুরস্কার এক জিনিস নয় !প্রথমটা কাজের বিনিময় পাওয়া অধিকার, দ্বিতীয়টা নয়! কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বা যে কোনও রকমের ভয় ছাড়া কাজ করতে পারাটাও অধিকার। সেটা না থাকলে তার জন্য আন্দোলন করে কর্মবিরতিতে গেলে সেটার জন্যে তাদের রোজগার করার অধিকারটা ত্যাগ করতে হবে? একটি ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত ঘটনার বিচার চেয়ে, সহকর্মীর মৃত্যুর বিচার চেয়ে আন্দোলন করাকে উইদাউট পে ছুটি নেয়ার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলো না বন্ধু!”
এক এক করে নেটিজেন থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু, সহ-অভিনেতারাও একে একে করেছেন কাঞ্চনের সমালোচনা। ত্যাগ করতে থাকেন কাঞ্চন মল্লিককে। নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন এই তারকা বিধায়ক। এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি তার বক্তব্যে লজ্জিত। তিনি ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমার উপরেও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রভাব পড়েছে। আমিও আন্তরিক ভাবে নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচার চাইছি।” ভিডিওর শেষে ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। ভিডিয়োবার্তায় ক্ষমা চাওয়ার পরেও মেলেনি নিস্তার।
সুদীপ্তা চক্রবর্তীর মতো কাঞ্চনকে ত্যাগ না করলেও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে লেখেন, “কাঞ্চনদা আমার খুব প্রিয় অভিনেতা এবং তা-ই থাকবেন ! ওঁর আজকের কথার তীব্র বিরোধিতা করছি। কিন্তু, কাজের ক্ষেত্রে কাউকে কোনও রকম ‘ত্যাগ’ বা বয়কট করার পক্ষে আমি নই! তাহলে সেই সব সহকর্মীকে বয়কট করতে হয়, যাঁরা নানা দলের হয়ে নানা কথা নানা সময়ে বলেছেন বা নানান কথায় সায় দিয়েছেন। আবার বলছি, কাঞ্চনদার আজকের কথা ভয়ানক ইনসেনসিটিভ এবং অযৌক্তিক। উনি নিজে সেটা উপলব্ধি করলে সবথেকে ভালো।”