আগামী সোমবার অর্থাৎ চলতি বছরের ২২শে জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। রামমন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে সেজে উঠেছে রামের জন্মভূমি অযোধ্যা। দেশ-বিদেশের খ্যাতনামী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছেছে আমন্ত্রণপত্র। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রামমন্দির উদ্বোধনের আগে ১১ দিনের জন্য ‘ব্রতপালন’ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজনে কোনো খামতি যাতে না থাকে সে দিকে নজর রাখছেন আদিত্যনাথ। রামলালার নিরাপত্তার দায়িত্বে বিশেষ বাহিনীও গঠন করা হয়েছে। আগামী ২২ জানুয়ারি রামলালার মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগেই রামমন্দিরের দায়িত্ব নেবে ওই বাহিনী।
জানা গেছে, প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে বেশ কিছু নিয়ম পালন করা হবে। তাই মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৬ই জানুয়ারি থেকেই শুরু হচ্ছে সেই সকল কর্মসূচি, যা চলবে ২২শে জানুয়ারি পর্যন্ত। কোন দিন কী কর্মসূচি রয়েছে তার বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করেছে ‘শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট’। সেই তালিকা অনুযায়ী, আগামী ২২শে জানুয়ারি পৌষ মাসের শুক্ল কুর্ম দ্বাদশী, বিক্রম সম্বত ২০৮০এর অভিজিৎ মুহূর্তে মন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হবে। তার আগে পর্যন্ত শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে বেশ কিছু আচার পালন করা হবে। ১৬ই জানুয়ারি থেকে ২১শে জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বাদশ অধিবাস নিয়ম পালন করা হবে।
১৬ই জানুয়ারি হবে প্রায়শ্চিত্ত এবং কর্মকুটি পুজো, ১৭ জানুয়ারি হবে মূর্তি পরিসর প্রবেশ পুজো, ১৮ই জানুয়ারি বিকেলে হবে তীর্থপুজো, জলযাত্রা এবং গন্ধাধিবাস। ১৯ জানুয়ারি সকালে হবে ঔষধাধিবাস, কেসরাধিবাস এবং ঘৃতাধিবাস এবং এইদিন বিকেলে হবে ধন্যধিবাস। ২০শে জানুয়ারি সকালে শর্করাধিবাস, ফলাধিবাস এবং বিকেলে পুষ্পধিবাস। ২১শে জানুয়ারি সকালে মধ্যধিবাস এবং বিকেলে সহ্যধিবাস। ১২১ জন আচার্য মিলে প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের পূর্বে এই সকল নিয়ম পালন করবেন। আর এই পুরো বিষটির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবেন জ্ঞানেশ্বর শাস্ত্রী দ্রাবিড় এবং তাঁকে সহায়তা করবেন কাশীর প্রধান আচার্য লক্ষ্মীকান্ত দীক্ষিত। আগামী ২শে জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের পরিচালক মোহন ভগবত, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হবে।
এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় আধ্যাত্মবাদ, ধর্ম, সম্প্রদায়, উপাসনা পদ্ধতি, ঐতিহ্যের সমস্ত প্রতিষ্ঠানের আচার্যেরা, ১৫০ জনের বেশি সাধু,সন্ন্যাসী এবং ৫০ জনের বেশি আদিবাসী, জনজাতি শ্রেণির শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন, এছাড়া বুদ্ধ, জৈন, শিখ সমাজের ধর্মীয় নেতা এবং হিন্দু ধর্মের নানা মতে বিশ্বাসী জনগণের ধর্মীয় প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে। এরপর ওইদিন উপস্থিত সকলে অনুষ্ঠান শেষে রামলালা দর্শনও করতে পারবেন।