চারিদিকে এখন শুধু নিট এবং নেট নিয়ে তোলপাড় কাণ্ড। ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা নিট-এর পর গবেষণা করার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা নেট-এও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীরা নিটের প্রশ্নফাঁস নিয়ে আঙুল তুলেছে কেন্দ্রের দিকে। বিহারের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা তদন্ত চালাচ্ছে। অপরদিকে নেটের প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অনুমান করা হচ্ছে যে, গত রবিবারই নেট প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় এবং ডার্ক ওয়েবে তা ছয় লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নিটকাণ্ডে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হলেও নেটকাণ্ডে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
দুই পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। আর এবার সেই আবহেই পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে নতুন আইনের নির্দেশিকা জারি করলো কেন্দ্র। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে, পরীক্ষা আইন— পাবলিক এগ্জামিনেশন অ্যাক্ট পাশ হয়েছিল, কিন্তু নিট এবং নেট নিয়ে বিতর্কের মাঝে কেন্দ্র এবার সেই আইনের নির্দেশিকা জারি করলো। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান গত বৃহস্পতিবার এই আইন কার্যকর করা নিয়ে নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হন। তিনি জানান যে, ইতিমধ্যেই আইন মন্ত্রক, এই আইন সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি করছে। কেন্দ্র ঠিক এর এক দিন পরেই নতুন পরীক্ষা আইন কার্যকর করার কথা ঘোষণা করেছে।
গত শুক্রবার কার্যকর হওয়া নয়া আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে গিয়ে কিংবা উত্তরপত্রে বেনিয়ম করতে গিয়ে ধরা পড়েন, তাহলে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। ওই ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত হলে তাকে ন্যূনতম তিন বছর এবং সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল খাটতে হবে। এর পাশাপাশি ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হতে পারে। আবার যদি দেখা যায় যে, কোনো নিয়ামক সংস্থা বা আয়োজক সংস্থা পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় কোনোরকম জালিয়াতি হচ্ছে জেনেও চুপ রয়েছে, তবে সেক্ষেত্রে তাদের জরিমানা হতে পারে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত।
এমনকি ওই নিয়ামক সংস্থার কোনো উচ্চপদস্থ আধিকারিক যদি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তবে তার ন্যূনতম তিন বছর ও সর্বোচ্চ দশ বছরের জেল এবং এর পাশাপাশি ১ কোটি টাকার জরিমানা হতে পারে। যদি পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কিংবা আয়োজক সংস্থার তরফ থেকে কোনো ব্যক্তি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তবে সেক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছর এবং সর্বোচ্চ দশ বছরের সাজা হতে পারে। এর পাশাপাশি ১ কোটি টাকার জরিমানা হতে পারে। আগামী ১লা জুলাই থেকে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে, তবে তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারাগুলিই এই আইনের ক্ষেত্রে কার্যকর থাকবে বলে সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।