বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ রামপুরহাটে ফুড পার্কে শুরু হয়েছে ফুটপাথে দখলদার উচ্ছেদ অভিযান। এই অভিযানকে ঘিরে চলছে তোলপাড়। বুলডোজ়ার নিয়ে জবরদখল উচ্ছেদে নামে স্থানীয় প্রশাসন। রামপুরহাট পুরসভার ১৭ এবং তিন নম্বর ওয়ার্ডে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এর জেরে অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডে, রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত এবং রামপুরহাট থানার আইসি-সহ পুলিশবাহিনী। দোকান ভেঙে দেওয়ায় মাথায় বাজ পড়েছে ব্যবসায়ীদের।
রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সৌরভ বলেন, ‘‘যেগুলো স্থায়ী নির্মাণ, তাদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। যেগুলো অস্থায়ী নির্মাণ, বাঁশ বা টিনের চাল দিয়ে তৈরি, সেগুলোর জন্য মাইক দিয়ে প্রচার চালানো হয়। আপাতত ওই অস্থায়ী নির্মাণগুলো সরাচ্ছি। স্থায়ী নির্মাণও প্রক্রিয়া মেনে সরানো হবে পরে। অনেকটাই কাজ এগিয়েছে। কোথায় কোথায় আরও বেআইনি দখল রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রামপুরহাটের সঙ্গে তারাপীঠ এবং নলহাটিতেও এই অভিযান চলবে। আমরা আগেও কিছু কাজ করেছি। অনেক বার বলা সত্ত্বেও কেউ নির্মাণ সরাননি। তাই এই পদক্ষেপ।’’
এলাকার স্থানীয় এক ব্যবসায়ী আতিমা বিবি বলেন, ‘‘আমাদের কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি। আমাকে দোকান থেকে জিনিসপত্রও বার করতে দেয়নি। তার আগেই ভেঙে দিল। ছোট দোকানগুলো ভাঙছে। কিন্তু বড় দোকানগুলোতে কিছু করা হচ্ছে না। আমরা গরিব মানুষ। আমি কোথায় গিয়ে ব্যবসা করবো? ছেলেমেয়েদের মুখে কীভাবে খাবার তুলে দেবো? কালকে রাতে শুনেছিলাম ভাঙবে। একটু তো সময় দিতে হবে।’’
অপর এক ব্যবসায়ী চাঁদু খান বলেন, ‘‘বুধবার রাত ৮টার সময় মাইক দিয়ে প্রচার চালানো হয়। বলা হয় সকাল সাতটার মধ্যে দোকান সরিয়ে নিতে হবে। সরকারের জমি সরকার ফেরত নেবে। তাতে কিছু বলার নেই। শুধু চেয়েছিলাম একটু সময় দিক, যাতে মালগুলো সরাতে পারি, কিন্তু সেটুকুও সময় দিল না। অন্য অনেক জায়গায় দোকান ভাঙা হলো না। সবার দোকান যদি না ভাঙা হয়, তাহলে আমি বাজারের মাঝখানে পাকা দোকান করবো। আমার তিন লক্ষের ঋণ আছে। সেগুলো কি সরকার মেটাবে?’’
ব্যবসায়ীরা বলেন, আগাম নোটিস না দিয়েই পুলিশ এই অভিযান কাজ চালান। যদিও প্রশাসন জানান যে, গত বুধবারই ওখানকার ব্যবসায়ীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এমনকি মাইক নিয়ে প্রচারনাও চালানো হয়েছিল, কিন্তু তাসত্বেও ওই ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে সরেননি। তাই রীতিমতো বাধ্য হয়েই পুলিশ এই পদক্ষেপ নেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রশাসনের তরফে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ার সময়ই ওই ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর এবং কয়েক জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে এবং ধাক্কাধাক্কিও হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে পুলিশ।