ব্যারাকপুরে বাড়ি ভাড়া চাওয়া নিয়ে অশান্তির জেরে এক বাসিন্দাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তারপর পিটিয়ে মারার অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট সেই সংক্রান্ত মামলায় পুলিশের তদন্তের তীব্র কটাক্ষ করল। এই ঘটনাটির সূত্রপাত ঘটে গত বছর জুন মাসে। বাড়িভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে খুন হন টিটাগড়ের বাসিন্দা গোবিন্দ যাদব। তাকে ছাদ থেকে ফেলে তারপর পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় পুলিশ সরাসরি খুনের ধারা যুক্ত না করে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। বুধবার সেই সংক্রান্ত মামলাতেই হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ভর্ৎসনা করেন পুলিশকে।
পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি বলেই জানান বিচারপতি। তিনি বললেন, ‘‘ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দেওয়া হল, তারপর ফের তাকে নীচে এসে পেটানো হল। এরপরেও পুলিশ খুনের ধারা যুক্ত করার মতো অপরাধ খুঁজেই পেল না। এই তো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবস্থা। পুলিশ যে ভাবে তদন্ত করেছে, তাতে তাদের প্রত্যেককে মেডেল দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা উচিত।’ এই ব্যাপারে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে ভর্ৎসনা করছিল আদালত। বুধবার সেই সময়ে রাজ্যের আইনজীবী সাফাই দিতে এলে তাকেও ভরা আদালতে বিচারপতি বলেন, ‘‘কোনও সাফাই দেবেন না। আজ কমিশনার হাজিরা দিয়েছেন। আর একটা কথা বললে আগামিকাল রাজ্যের ডিজিকে হাজিরার নির্দেশ দেব।’’
বুধবার এই মামলায় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কমিশনার অলোক রাজোরিয়াকে এবং তদন্তকারী অফিসারকে তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। মামলাটি শুনানি হয় বিচারপতি বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই টিটাগড়ের ঘটনার গুরত্ব স্পষ্ট করে বেঞ্চ বলে, ‘‘এই ঘটনায় সবাইকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন ছিল। পুলিশ যা করতে পারেনি। এই মামলায় সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।’’ উল্লেখ্য, গত বছর জুন মাসে হওয়া এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। সেই মামলাতেই পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত।