ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সমাজমাধ্যম সংস্থা এক্স এবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কর্নাটক হাই কোর্টে মামলা করেছে। কেন্দ্র, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি নির্দিষ্ট ধারাকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে ইলন মাস্কের সংস্থা ‘এক্স’। ‘এক্স’-এর তরফে দাবি করা হয়েছে যে, এর মাধ্যমে অনলাইনে বিষয়বস্তুর উপর অবৈধ ভাবে নিয়ন্ত্রণ এবং একতরফা কাটছাঁটের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী একটি রায়ের পরিপন্থী। মাস্কের সংস্থার অভিযোগ যে, এর মাধ্যমে অনলাইনে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকারকে খর্ব করা হচ্ছে। ‘এক্স’-এর বক্তব্য, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারার সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে না।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারায় সরকারকে একক ভাবে অনলাইন বিষয়বস্তু ‘ব্লক’ করার স্বাধীনতা দেয় না। কেন্দ্র এই ধারার অপব্যবহার করে স্বেচ্ছাচারী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ এক্স-এর। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের এই দুইটি ধারার কথাই মূলত তুলে ধরেছে এক্স। কেন্দ্র, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৭৯(৩)(বি) ধারাকে যেভাবে ব্যবহার করছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করেছে ইলন মাস্কের সংস্থা ‘এক্স’। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৭৯(৩)(বি) ধারার আওতায় অনলাইনে কোনো বিষয়বস্তুকে মুছে ফেলার জন্য আদালতের নির্দেশ বা সরকারি বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কোনোরকম পর্যালোচনা বা যাচাই প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ নেই।
সরকারি নির্দেশের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে অনলাইনে সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু মুছে না ফেললে ওই সংস্থা আইনি রক্ষাকবচ হারাতে পারে। এমনকি, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলাও দায়ের হতে পারে বলে উল্লেখ রয়েছে। এমনকি, মামলায় ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের কথাও তুলে ধরে বলা হয়েছিল যে, কেবলমাত্র সঠিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বা ৬৯(এ) ধারায় নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসারে, অনলাইনের কোনো বিষয়বস্তু ‘ব্লক’ করার ক্ষমতা রয়েছে সরকারের, তবে বিষয়বস্তুটির জন্য জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব বা আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে বলে মনে করলে, তবেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়াটির সঙ্গে আবার তথ্যপ্রযুক্তি বিধি, ২০০৯ জড়িয়ে রয়েছে। সেই বিধি অনুসারে, অনলাইনে কোনো বিষয়বস্তু ‘ব্লক’ করার আগে সেই বিষয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। এমনকি, এক্ষেত্রে কেন্দ্র ওই ৬৯(এ) ধারার কোনো তোয়াক্কা না-করেই নিজের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে‘এক্স’।