ছেলেধরার খবর এখন প্রায়শই শোনা যাচ্ছে। একে একে বারাসত, অশোকনগর, খড়দহের পর এবার শিরোনামে উঠে এসেছে বনগাঁর নাম, যেখানে ছেলেধরা সন্দেহ করে এক ভবঘুরেকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগে ওঠে। বনগাঁ থানার পুলিশ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ পুরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরপল্লিতে। গত শনিবার রাতে রাস্তায় এক ভবঘুরে যুবককে ঘুরতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে ছেলেধরা ভেবে সন্দেহ করে। মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে ওই ভবঘুরে যুবকটিকে মারধর শুরু করে।
খবর পেয়ে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং গুরুতর জখম অবস্থায় থাকা ওই যুবককে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে ওই যুবকটি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওইদিন রাতেই এই গণপিটুনির ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়, যুবককে মাটিতে ফেলে মারধর করা হচ্ছে। পুলিশ তদন্তে নেমে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। এই প্রথমবার নয়, এর আগে বারাসত, খড়দহ এবং অশোকনগরেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। বারাসতে দুই জায়গায় মোট তিন জনকে ছেলেধরা সন্দেহ করে মারধর করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে একজন মহিলা ছিলেন।
এরপর অশোকনগরে ছেলেধরা সন্দেহ করে এক তরুণীকে মারধর করা হয়, আর পুলিশ বাধা দিতে গেলে উন্মত্ত জনতা, পুলিশকে মারধর করতে শুরু করে। এরপর খড়দহে এক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহ করে মারধর করে এলাকার মানুষজন। সবকটি ঘটনাই ঘটছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কোনো না কোনো অংশে। এখন তাই প্রশ্নের মুখে জেলার নিরাপত্তা। বনগাঁর ঘটনার প্রসঙ্গে বনগাঁ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বন্দনা দাস কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানতে পেরে রাতে আমি পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ওঁকে মারধর করা হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। সাধারণ মানুষকে বলব, গুজবে কান দেবেন না। এই ধরনের কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখলে পুলিশ-প্রশাসনকে জানান। আইন হাতে তুলে নেবেন না।’’