কেন্দ্রীয় সরকার এবার আগামী ২৬শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ধারা তৈরি করে ফেলতে চাইছে, যাতে ওই আইনের মাধ্যমে ভোট ঘোষণার আগেই প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলি থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে পালিয়ে আসা মানুষজনকে নাগরিকত্ব প্রদান করা শুরু করা যায়। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার সিএএ আইন পাশ করায় কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশ থেকে যদি কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘু উৎপীড়নের কারণে ভারতে আসেন, তবে সেক্ষেত্রে ভারত সেই সকল সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেবে।
এই তালিকায় মুসলিমদের নাম না থাকায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পথে নামে বিরোধীরা। এই বিরোধের কারণে কেন্দ্র সেই সময়ে ওই আইন রূপায়ণ থেকে পিছিয়ে গেছিল। তারপরে চার বছর কেটে গেলেও ওই আইনের ধারা এখনো পর্যন্ত তৈরি করে উঠতে পারেনি সরকার। পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে নাগরিকত্বের দাবিতে সরব বাংলাদেশ থেকে আসা মতুয়া সমাজ। তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় বিজেপি, কিন্তু মাঝের চার বছরে সিএএ প্রশ্নে কার্যত হাত গুটিয়ে থাকায় ক্ষুব্ধ হয় মতুয়াদের একটা বড় অংশ। এই বিল নিয়ে বিস্তর বিতর্ক-প্রতিবাদও হয়। শেষ অবধি সংসদে পাশও হয়ে যায় এই বিল। আইনে পরিণত হলেও, সিএএ-র ধারাগুলি এখনও তৈরি হয়নি। এবার সেই ধারা নিয়েই কাজ শুরু করছে কেন্দ্র। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি শীর্ষ সূত্র থেকে দাবি করা হয়, খুব দ্রুত ওই আইনের ধারা তৈরি করা হবে।
সূত্র অনুযায়ী, দেশের শাসক শিবির পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওই নাগরিকত্ব প্রদানের কাজ শুরুর পক্ষপাতী হলেও বিরোধীদের বক্তব্য, গেরুয়া শিবির ভোটের আগে মেরুকরণকে ‘অস্ত্র’ করতেই সিএএ নিয়ে এই ভাবে সক্রিয় হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে যেহেতু এই সিএএ যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে, তাই এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরগরম। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি এই সিএএ নিয়ে গোটা দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করছে। আর অপরদিকে সিপিএমের বক্তব্য, বিজেপি ভোটের আগে কাগজ নিয়ে একটা হইচই তৈরি করতে চাইছে। বিরোধীদের মতে, গোটা তৎপরতাটাই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে। ভোট শেষ হলেই ফের এই কাজে পড়বে ভাঁটা। এই সকল অভিযোগকে তোয়াক্কা না করে বিজেপি জানিয়েছে, মানুষ এই আইন গ্রহণ করেছেন।