রবিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থানার পয়াগ গ্রামে ঘটলো চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আসলে এখানে অবস্থিত একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে উড়ে গেল গোটা একটা বাড়ি। এই ঘটনার জেরে আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িও হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত। এই ঘটনায় এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য, তবে এখনো পর্যন্ত এই ঘটনার ফলে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে। আর এই বিস্ফোরণের জেরে গোটা বাড়িটিতে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে, তার দাপটে আশপাশেরও বেশ কয়েকটি বাড়িতে ধরে ফাটল। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই তৎক্ষণাৎ দমকলের ২টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
দীর্ঘক্ষণের চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। বর্তমানে পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বাড়িটিতে অবৈধ বাজি কারখানা ছিল বলেই গ্রামবাসীদের অভিযোগ। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, কোলাঘাট থানার পয়াগ গ্রামে একাধিক অবৈধ বাজি কারখানা রয়েছে, যেখানে বছরের পর বছর ধরে রমরমিয়ে চলছে বাজির ব্যবসা। এমনকি এও অভিযোগ করা হয়, প্রশাসনের একাংশের মদতেই নাকি এই অবৈধ বাজির কারবারিরা ওই এলাকায় জাঁকিয়ে বসে ব্যবসা চালাচ্ছেন। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায় যে, প্রতি বছর একাধিক বার অবৈধ বাজি কারখানাগুলিতে অভিযান চালানো হয়, কিন্তু তারপরেও লুকিয়ে-চুরিয়ে চলছে এই বাজি কারখানাগুলি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, রবিবার রাত প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ পয়াগ গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ মাইতির বাড়িতে বিস্ফোরণের আওয়াজে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। আর মুহূর্তের মধ্যে গোটা বাড়ি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। পরিবারের সদস্যেরা দ্রুত বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। আর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কোলাঘাট থানার পুলিশ এবং দমকল বাহিনী। এর পাশাপাশি স্থানীয়েরাও আগুন নেভানোর সহায়তা করেন। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় যে, বিস্ফোরণ ঘটা বাড়িটি পুরোপুরিভাবে ভগ্নস্তুপে পরিণত হয়েছে, আর তার আশপাশের আরও কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ই মে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামের বাজি কারখানায় ঠিক এমনই বিস্ফোরণ ঘটেছিল, যার ফলে প্রায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। খাদিকুলের বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছিল, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল যে, সেই ঘটনার ঠিক এক বছরের মাথায় ফের পূর্ব মেদিনীপুরের বেআইনি বাজি কারখানায় ঘটলো বিস্ফোরণ কাণ্ড, যার জেরে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুর।