আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে ১৯২৪ সালের ৮ই জুন, বিখ্যাত পর্বতারোহী জর্জ ম্যালরির সঙ্গে অ্যান্ড্রু কমিন আরভিন এভারেস্ট অভিযানের জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন। উল্লেখ্য, মাত্র ২২ বছর বয়সে আরভিন, এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার জন্য যাত্রা করেছিলেন। এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে তারা অদৃশ্য হয়েছিলেন। তাদের কোনোরকম খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর ১৯৯৯ সালে ম্যালরির দেহাবশেষ পাওয়া গেলেও হদিস মেলেনি আরভিনের। তবে, ১০০ বছর পর মিলল জুতোসমেত পায়ের অংশ।
এভারেস্টের বরফ গলে পা ও জুতো বেরিয়ে আসে, যা ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিকের তথ্যচিত্র নির্মাতাদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক চ্যানেলের রিপোর্ট অনুযায়ী, এভারেস্টের উত্তর দিকের নীচে রোংবুক হিমবাহে অভিযান চালানোর সময় চিত্রগ্রাহক তথা পরিচালক জিমি চিন একটি জুতো খুঁজে পান। ওইসময় তার সঙ্গে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং পর্বতারোহী এরিখ রোপেকে এবং মার্ক ফিশার। সেই জুতোটি দেখার পর তারা ভাল করে পরীক্ষা করে এর সঙ্গে কাটা পা দেখতে পান। তখন তারা বুঝতে পারেন যে, এটি আসলে ১০০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া পর্বতারোহী অ্যান্ড্রু কমিন আরভিনের জুতো ও পা।
আরভিন মূলত স্যান্ডি নামেই বেশি পরিচিত। প্রাপ্ত ওই জুতোর সঙ্গে যে মোজাটি পাওয়া গেছে, তাতে আরভিনের নাম লাল সুতো দিয়ে সেলাই করা ছিল, যা দেখে তথ্যচিত্র নির্মাতাদলটি অনুমান করে যে, ওই জুতো ও পা আরভিনের। আর এবার আরভিনের জুতো ও পা পাওয়ার পর পর্বতারোহীরা মনে করছেন যে, আজ থেকে ১০০ বছর আগে এভারেস্ট চূড়ায় ঠিক কী ঘটেছিল তা সমাধান হতে পারে। বর্তমানে আরভিনের পরিবারের সদস্যেরা প্রাপ্ত দেহাবশেষের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের প্রস্তাব দিয়েছেন।
এখন যদি প্রমাণিত হয় যে, এই জুটি এভারেস্ট চূড়ায় উঠেছিলেন, তবে এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগের রেকর্ডটি ভেঙে যাবে, কারণ এতদিন ধরে মনে করা হয়েছে যে, ১৯৫৩ সালে এডমন্ড ও তেনজিং জুটি প্রথম এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছেন। এখন অনেকেই মনে করছেন যে, এডমন্ড এবং তেনজিং এভারেস্টে পৌঁছানোর ২৯ বছর আগেই হয়তো অ্যান্ড্রু কমিন স্যানডে আরভিন প্রথম পর্বতারোহী ছিলেন।