গোটা রাজ্যজুড়ে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে একদিকে চলছে তোলপাড়, আবার মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে হেমা কমিটির রিপোর্টকে কেন্দ্র করে চলছে তোলপাড়। এরই মাঝে টলিপাড়ায় একের পর এক যৌন হেনস্থার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। অভিযোগ উঠছে অরিন্দম শীল থেকে জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। আর এবার সেই আবহে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে যৌন হেনস্থা রুখতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন টলিপাড়ার বিখ্যাত অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। এবার ঋতাভরী চক্রবর্তীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গেছে যে, গত মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে নবান্নে গেছেন অভিনেত্রী। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, সেই দিন সকাল থেকে ঋতাভরীর আসার খবর ছিল আধিকারিকদের কাছে। বিকেল ৫টা নাগাদ মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, কিন্তু নবান্ন ছেড়ে যাননি। মনে করা হচ্ছে, অভিনেত্রীর জন্যই অপেক্ষা করছিলেন তিনি।
সম্প্রতি, মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক নারীনিগ্রহের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ঋতাভরী সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতের যৌন হেনস্থার ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছে হেমা কমিশনের রিপোর্ট। আমি ভাবছি, বাংলা চলচ্চিত্র জগতে কেন এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে না?” অভিনেত্রী সমাজমাধ্যমে লেখা তার ওই পোস্টে জানিয়েছিলেন, অতীতে তিনিও টলিপাড়ায় যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন। নিজের পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীকে উল্লেখ করে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে যৌন হেনস্থা রুখতে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধও করেছেন। অভিনেত্রী ওই পোস্টের ক্যাপশনে মুখ্যমন্ত্রীকে উল্লেখ করে লিখেছেন, “প্রায় এই একই ধরনের ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটেছে। জানি আরও কয়েক জন টলিপাড়ার অভিনেত্রীর সঙ্গেও ঘটেছে। দিদি, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতেও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে, এখনই। এটাকে গুরুত্ব দেওয়ার আগে আরও একটি ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটে যাক আমরা চাই না। রুপোলি দুনিয়ায় রয়েছি বলে, পুরুষেরা আমাদের পণ্য বা তাদের যৌনতৃষ্ণা মেটানোর মাধ্যম হিসাবে দেখবে, এটা হতে পারে না।’’
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমা কমিশনের আদলে পশ্চিমবঙ্গেও নারী সুরক্ষার জন্য একটি বিশেষ কমিটি তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন।মনে করা হয় যে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে টলিপাড়ায় মহিলা শিল্পীদের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সুরক্ষা-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে দুই জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এমনকি, এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী ঋতাভরী তার অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের দুই প্রথম সারির প্রযোজকের বিরুদ্ধেও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করতে পারেন বলে অনেকে মনে করেছিলেন। যদিও এই গোটা বিষয়টি এখনো প্রকাশ্যে আসেনি।