কোনো ব্যক্তির আস্বাভাবিক মৃত্যু হলে পুলিশের প্রাথমিক কাজ হলো সেই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা। এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট হয়, কীভাবে ব্যক্তিটির মৃত্যু হয়েছে, কখন হয়েছে ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই কোনো বিষয় তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের অন্যতম হাতিয়ার হলো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। মৃতের পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনেরও অধিকার থাকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার। মৃতের পরিবারের লোকজন অনেক সময় অভিযোগ জানান যে, এই রিপোর্ট পেতে তাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। অনেক সময় আবার দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে যান মৃতের পরিজনেরা। আরজি কর হাসপাতালে যুবতী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উঠছে একের পর এক প্রশ্ন। আর সেই প্রশ্নের মধ্যে রয়েছে ময়নাতদন্ত সংক্রান্ত বিষয়।
অনেকেই মৃত চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেন আরজি কর হাসপাতালেই মৃতার ময়নাতদন্ত করা হল, তা নিয়েও দেখা গেছে অসন্তোষ। তবে, এবার রাজ্য পুলিশ জানালো যে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া মোটেই জটিল বিষয় নয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দ্রুত পেতে কী করতে হবে, সেই বিষয়ে সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো পোস্ট করে জানাল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। গোটা দেশে যখন আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে চলছে তোলপাড়, সেই আবহে রাজ্য পুলিশের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি চাপে পড়েই এই ভিডিয়ো পোস্ট পুলিশের? আসলে, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট, আরজি কর মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।আর ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ বুধবার দেখা গেল রাজ্য পুলিশ ভিডিয়োবার্তা দিয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত হাতে পাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করে।
অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা থাকে না যে, তারা কোথা থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করবেন, হাসপাতাল না থানা। সেই ধোঁয়াশাই কাটাতেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবার দিলো ভিডিয়োবার্তা। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের ভিডিয়োর মধ্যেই রয়েছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়া নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিলো রাজ্য পুলিশ। ভিডিয়োয় হাওড়ার পুলিশ কমিশনার প্রবীণকুমার ত্রিপাঠী বলেন, “অনলাইনে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার সুবিধা এখনও চালু হয়নি। খুব শীঘ্রই এই প্রক্রিয়া অনলাইন ব্যবস্থায় মিলবে। তবে যত দিন না সেই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে, তত দিন থানা থেকেই মিলবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।” তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেতে কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিনামূল্যেই থানা থেকে রিপোর্ট পাওয়া যাবে। যদি কেউ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে সরাসরি জেলা কন্ট্রোলরুম বা কমিশনারেটে যোগাযোগ করতে পারেন।